এই মাঝরাতের অরোরা আলোয় .....✍প্রদীপ চৌধুরী
কবিতা
এই মাঝরাতের অরোরা আলোয়....
প্রদীপ চৌধুরী
তোমার প্রতি এই আমার শর্তহীন আকুতি
সমুদ্রতনয়া ইলা—
ঊর্মিমুখর কর্কট-বলয়ের আলোয় আমার সামনে প্রকাশিত হও
শীতের ভ্রূকুটি উপেক্ষা কর
উৎসবমদির রত্নাবতী
এলোমেলো আঙুল তুলে দেখে নাও
আমার এই ভাঙাচোরা শরীরের
নগ্ন প্রকাশ— জেনে নাও আমার
এই মতিভ্রষ্ট ভ্রমণপিপাসা—
কর্কট সাগর পারে একা আমি
ইবসেনের ভূতের মতো নির্দয় ও প্রহৃত
আমি দাঁড়িয়ে আছি সেই চোরাবালিতে
যেখানে তলিয়ে যেতে যেতে একজন গণিকা-হৃদয়
প্রেমিকাকে প্রশ্ন করেছিল— ‘আমাকে
এভাবে মারছিস কেন ? কুত্তী মাগী ?’
অতলে হারাবার আগে সে দেখেছিল বিশ্বসুন্দরী পিশাচীকে
কর্কট সাগর পারে একা— আমি একা, কিন্তু আমি একা নই—
আমি ধ্রুব সত্য— মৌন ও মুখর আমার একাগ্রতা
আমি ক্যাপ্টেন স্কারোকে ভুলিনি
গণিকা-হৃদয় প্রেমিকাদের আমি চিনি
আমি উত্তরের বরফ-পাহাড়ের দিকে তাকিয়ে আছি
আমিও ওদের মতো গলে যেতে চাই
ইবসেনের ভূতের মতো— একা ও নীরবে
আমি কর্কটক্রান্তির ঠিকানা-বর্জিত বালক
ক্ষুধা ও অনিয়মের মধ্যে আমার কাল পরিক্রমা
আমাকে তাড়িত করে না ভয়— ভালবাসা হারাবার ভীতি
দেখ এই উদ্ধত প্রকাশ
যদি স্বীকারোক্তি বল— তবে তাই
যদি বল ভালবাসার প্লাস্টিক মোড়কে
এ আমার অ-হিত বাসনা—
বলাৎকার আত্মনাশ এবং খুনের— তাই তবে;
তোমার পদনখ শিলাখণ্ডে আভূমি
শায়িত হবার আগে
যদি তোমার সমকামী আদি দেবতারা
খেলার নিয়মে আমার তলপেটে লাথি মারে— তাই হোক—
জন্মান্তরের ওপারে দাঁড়িয়ে থাকা সহচরী
হারিয়ে যাওয়া সখাগণ— জাগো জাগো জাগো
ম্লান সৌরতাপে
আজ এই মাঝরাতের অরোরা আলোয়
পৃথিবীর প্রান্তরেখায় দাঁড়িয়ে আমার
যাবতীয় শোধবোধ, আজই—
আমি তৈরী;
উৎক্ষিপ্ত বস্তু— বরফ নিঃসারিত মহাপ্লাবন
আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে চলো চেনা ও অচেনা
মহাকাশের নিরুদ্ধ নিয়ম
গতিপথ পাল্টাও পৃথিবী
নিয়ম অনিয়মের শর্ত ভুলে
একে অপরকে জড়িয়ে ধর, হাত রাখ প্রেমে
উত্তর সাগর থেকে বঙ্গোপসাগরে আজও
আরো বেগবতী আমার অকথিত বাণী—
শিরা, শরীর— আমার ভগ্ন হৃদ-সংস্থাপন*
.................................
*ওসলো, সেপ্টেম্বর ২০০৮
--------------------