"মেঘবালিকার দেশে" (তিনচুলে-তাকদা- লামাহাটা) ....✍শম্পা বসু দাস
ভ্রমণ
"মেঘবালিকার দেশে" (তিনচুলে-তাকদা- লামাহাটা)
শম্পা বসু দাস
আজকে বলবো মেঘ আর পাহাড়ের গল্প।সেই যে মেঘবালিকারা,- যারা থাকতো নীল পাহাড়ের দেশে,তাদের দেশেই তো গেলাম আমরা !
সেই মেঘবালিকাদের সাথে পাহাড়ের তো ভারি ভাব,তারা যেন পাহাড় কে ডেকে বলে,
"তুই কি আজ বৃষ্টি নিবি?
আলতো স্পর্শে গা ভিজাবি?
ভালবেসে বৃষ্টি দেবো,তোর গহীনে জল ছিটাবো
শান্ত কোলে ঘুম পাড়াবো
বৃষ্টি নিবি?"
এমন আদুরে আবদার রুক্ষ পাহাড় কি করে দূরে সরিয়ে রাখতে পারে?তাই এখানে সারাদিনই চলে মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরি !মেঘবালিকার দল লম্বা চুলের গুচ্ছ খুলে পাহাড়ের আড়ালে লুকিয়ে থাকে,আবার কখন যেন বেরিয়ে এসে পাহাড় টাকে এক্কেবারে ঝুপুস জলে স্নান করিয়ে দেয়!!আজ তাদের ই গল্প -ছবি এই পাতায়।
'তিনচুলে'- মানে তিনটি চুলা বা উনুন।এখান প্রধান তিনটি পাহাড় তিন চুলা/উনুনের মত তাই এরূপ এর নাম।এর উচ্চতা 5800ft.।এটি ছোট্ট একটি পাহাড়ি জনপদ(hamlet)।দার্জিলিঙ থেকে এর দূরত্ব মাত্র 30কিমি।আকাশ পরিস্কার থাকলে এখান থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা দারুণ দেখা যায়।কিন্তু ঐ মেঘবালিকাদের সাথে অভিমান করে তিনি মুখ লুকিয়েছেন।ফলে আমাদের কাছে তিনি অধরাই রয়ে গেছেন।
এখানে ঘুম ভাঙ্গে পাখির ডাকে!মাঝে মাঝে মেঘ এসে আলতো স্পর্শে তাদের ভালবাসা জানিয়ে দেয়।-
" মেঘের বাড়িতে ভেজা ভেজা পায়ে তাথৈ তাথৈ বরষা
কাকভেজা মন জল থই থই
রাত্রির হলো ফরসা".........
দার্জিলিঙ মেল আমাদের একটু দেরীতে নিউজলপাইগুড়িতে পৌছে দেওয়ায় আমরা তিনচুলে পৌছাতে প্রায় বিকেল হয়ে গিয়েছিল।তাই ফ্রেশ হয়েই আমাদের হোমষ্টে (অভিরাজ হোমষ্টে)থেকে সদলবলে পায়ে হেঁটে বেড়িয়ে পরলাম একেবারে কাছেই একটি মনাষ্ট্রি দেখতে।
ধূপি, দেওদারের বনের মধ্যে চলে গেছে এই পথ।
ছোট্ট একটা মনাষ্ট্রী।পথের দুপাশে অজস্র নাম না জানা ফুলের সমারোহ।পরদিন আমাদের উদ্দেশ্যে তাকদাঅর্কিড সেন্টার ,পেশক চা বাগান,লামহাটা ইকো পার্ক দেখার।
তাকদা এখান থেকে মাত্র 3 km দূরে।আমরা সেখানে গেলাম অর্কিড সেন্টারে।আহা চোখ জুড়ানো অর্কিড সেখানে।এখান থেকে পেশক চা বাগান।ব্যাস এখানে সবাই নেমে পড়লো চা বাগিচায়,ছবি তুলতে আরকি!এত সবুজ কোথায় আর দেখি!😥দূষণমুক্ত পরিবেশ যে মনের দূষণকেও যে একেবারে মুক্ত করে দেয়।স্বচ্ছ আর পবিত্র হয় মন।এরপর লামাহাটা।প্রায় 6.3 km দূরে অবস্থিত লামাহাটাতে রয়েছে Eco park.পাইন,ধূপি, দেওদারের বনের মধ্যে সরু পথ চলে গেছে 750 mt.উচ্চতায় একটা ছোট্ট হ্রদে।
ফেরার পথে আমাদের হোমষ্টের একেবারেই কাছে গুম্বাদারা ভিউ পয়েন্ট।
জানিনা ছবিতে কতখানি জায়গার বিবরণ তুলে ধরতে পেরেছি !তবে মনের অ্যালবামে অনেকটা জায়গা এই ছোট্ট তিনচুলের জন্য রয়ে গেল!😍
(সমাপ্ত)
--------------------