রাধাভাব ....✍প্রাণকৃষ্ণ মিশ্র
অন্যরকম
রাধাভাব
প্রাণকৃষ্ণ মিশ্র
রাধা এ যুগের নয় সর্ব যুগের শ্রেষ্ঠ নায়িকা ।আর কৃষ্ণ শ্রেষ্ঠ নায়ক। রাধা কৃষ্ণের প্রেম কাহিনীর একটি অংশ দোলযাত্রা। রাধা নামের অপার মহিমা। এই নাম জপে বৈষ্ণবকুল মাতোয়ারা। প্রেম দুইপ্ৰকার। স্বকীয় প্রেম ও পরোকিয়া প্রেম। দ্রাপরের কৃষ্ণের স্বকীয় প্রেম যতটা না তাৎপর্যপূর্ণ হয়েছে ,তার পরোকিয়া প্রেম ততধিক তাৎপর্যপূর্ন। সত্যভামা, জাম্ববতী, কালিন্দী প্রভৃতি রমণীরা ছিলেন কৃষ্ণর স্বকীয় রমণী। কিন্তু রাধা ছিলেন কৃষ্ণের পরকীয়া রমণী। কৃষ্ণের সমর্থা নায়িকা। কৃষ্ণ ও রাধার প্রেম ছিল সেকালের ধর্ম, গৃহ, দেশ, সমাজ সবকিছুকে বিসর্জন দিয়ে এক সত্যের খুঁজে চলা। যদিও ধর্মের দিক থেকে সে প্রেমকে অন্য দৃষ্টিতে দেখানো হয়। সে বিষয়ে আলোচনা এখানে মুখ্য নয়।
আধ্যাত্মিকতা ,ধর্মের বাইরে বেরিয়ে ভাবলে দেখুন রাধাকৃষ্ণের প্রেম আজও বিরাজিত। যুগযুগ ধরেই বিরাজমান হবে সব সমাজে, হৃদয়ে ,মননে।
প্রত্যেক জীবের মধ্যেই রাধা ভাব থাকে। প্রেম , ভালোবাসা ছাড়া মানুষ কেন- কোন জীব জন্তুও বাঁচতে চায় না ,বাঁচতে পারে না।
তাই তো লেখকের কলমে, শিল্পীর কন্ঠে বারেবারে উচ্চারিত হয়-
“চাহিনা বাঁচিতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর”।
যমুনার তীরে রাধার লুকিয়ে চলে আসা। দামাল কৃষ্ণের বাঁশির সুরে পাগলপন আচরণ গোপিনীদের । বাঁশির মধুর সুরে ভয়ঙ্কর নরখাদক বাঘ থেকে ময়ূর পর্যন্ত সব জীবজন্তুদের নৃত্য সবই রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলার সাক্ষী। বৈষ্ণব সন্ন্যাসীরা আজও নাকি বৃন্দাবনে সে লীলা প্রত্যক্ষ করেন। সে যাই হোক
সুন্দরের প্রতি অমোঘ টান মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। গোপনারীদের সে যুগে কৃষ্ণের প্রতি অনুরাগকে পন্ডিতেরা লীলা বলেছেন ঠিকই। সেই সত্ত্বা আজও বয়ে চলে নারী পুরুষের মধ্যে আবহমান কাল ধরেই। এ রেওয়াজ বন্ধ হবার নয়। পুরুষের প্রতি প্রকৃতির টান , প্রকৃতির প্রতি পুরুষের অনুরাগ চিরাচরিত। এই টানে কোন অন্যায় নেই। যে প্রেমে দুই মন, দুই শরীরের এক হয়ে যায় স্বার্থছাড়াই সে প্রেম তো আসল । আজকের সমাজে সে প্রেম হয়ত মুখে প্রকাশ করা যায় না কিন্তু প্রায় প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই গোপনে বিরাজ করে।
বসন্ত ঋতু প্রেমের ঋতু এটা বলা যায়। কিন্তু আমি একজনকে ভালোবাসি এটা বলতে আমরা কুন্ঠিত বোধ করি, জড়তা আসে মনে। কিন্তু ভাবুন কৃষ্ণ পত্নী সত্যভামা, জাম্ববতী, বা কালিন্দী ভজনা আমরা করি না। স্থানও পায় নি সাহিত্যে সেভাবে । অথচ স্থান পেয়েছে রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা, রাসলীলা, দোলপূর্ণিমা।
এর কয়েকটি কারণ হলো
প্রথমত:-নিঃস্বার্থ ভালোবাসার বিকল্প নেই।
দ্বিতীয়ত:-অবসাদ কাটাতে প্রেম ই সব থেকে ভালো ঔষধ।
তৃতীয়ত:-রাধাতত্ত্বে প্রানের টান আছে। আছে এক নির্ভেজাল শান্তি।
তাই তো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথও বসন্ত উৎসবের গান লিখেছিলেন।
এবার একটু অন্যভাবে বলি রাধাভাব কি। যা প্রত্যেকের মধ্যেই আছে।
ধরুন ভ্রমণপিপাসু মানুষ সংসারের বাঁধা, অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা উপেক্ষা করেও বারেবারে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে পাহাড়, নদী ,সমুদ্রতীরে বা জঙ্গলে। এখানে তাঁর ইচ্ছাটি রাধাভাব। কৃষ্ণ এখানে প্রকৃতি। ঠিক যেমন স্বামী আয়ানের কড়া পাহাড়া উপেক্ষা করে রাধার রাতের অন্ধকারে যমুনা তীরে কৃষ্ণের সাথে দেখা করার প্রয়াসের ন্যায় কঠিন কাজ। শত বাঁধা যেখানে উপেক্ষিত। অথবা নিধুবনে লুকিয়ে কৃষ্ণের সঙ্গে সাক্ষাৎ।
পরকীয়া কেবল একজন নারী পুরুষের মধ্যেই হয় এমনটা নয়। প্রকৃতি প্রেম ও পরকীয়া।পশু প্রেমও পরকীয়া। যে প্রেমে স্বকীয় প্রেমের থেকেও বেশি আনন্দ অনুভূত হয় সে প্রেমই পরকীয়া প্রেম।
প্রেমে মিলনের আকাঙ্খা থাকেই। এটা স্বাভাবিক চাহিদা। পরকীয়া প্রেমে শরীর মুখ্য। শরীর বাদ দিয়ে পরকীয়া প্রেম যেমন হয়না। তেমনি ভ্রমন পিপাসু মানুষ ঘরে বসে ভ্রমনের অনুভূতি নিতে পারে না। সে চায় বারেবারে ফিরে যেতে পাহাড়, নদী, জঙ্গল, বা সমুদ্রের কিনারায়। এটাই রাধাভাব।
মনের টানে যা ইচ্ছা তাই করা উচিত। মনকে কষ্ট দেওয়া অপরাধ। এই মনের আকাঙ্খা ,চাহিদা এসবই হচ্ছে রাধভাবের প্রকাশ মাত্র। তবে তা যেন বিবেক বর্জিত বা অসভ্যতা না হয়। তা যেন নিঃস্বার্থ ও সমাজের জন্য মঙ্গলকারী হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
আধ্যাত্মিকতা ,ধর্মের বাইরে বেরিয়ে ভাবলে দেখুন রাধাকৃষ্ণের প্রেম আজও বিরাজিত। যুগযুগ ধরেই বিরাজমান হবে সব সমাজে, হৃদয়ে ,মননে।
প্রত্যেক জীবের মধ্যেই রাধা ভাব থাকে। প্রেম , ভালোবাসা ছাড়া মানুষ কেন- কোন জীব জন্তুও বাঁচতে চায় না ,বাঁচতে পারে না।
তাই তো লেখকের কলমে, শিল্পীর কন্ঠে বারেবারে উচ্চারিত হয়-
“চাহিনা বাঁচিতে আমি প্রেমহীন হাজার বছর”।
যমুনার তীরে রাধার লুকিয়ে চলে আসা। দামাল কৃষ্ণের বাঁশির সুরে পাগলপন আচরণ গোপিনীদের । বাঁশির মধুর সুরে ভয়ঙ্কর নরখাদক বাঘ থেকে ময়ূর পর্যন্ত সব জীবজন্তুদের নৃত্য সবই রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলার সাক্ষী। বৈষ্ণব সন্ন্যাসীরা আজও নাকি বৃন্দাবনে সে লীলা প্রত্যক্ষ করেন। সে যাই হোক
সুন্দরের প্রতি অমোঘ টান মানুষের সহজাত প্রবৃত্তি। গোপনারীদের সে যুগে কৃষ্ণের প্রতি অনুরাগকে পন্ডিতেরা লীলা বলেছেন ঠিকই। সেই সত্ত্বা আজও বয়ে চলে নারী পুরুষের মধ্যে আবহমান কাল ধরেই। এ রেওয়াজ বন্ধ হবার নয়। পুরুষের প্রতি প্রকৃতির টান , প্রকৃতির প্রতি পুরুষের অনুরাগ চিরাচরিত। এই টানে কোন অন্যায় নেই। যে প্রেমে দুই মন, দুই শরীরের এক হয়ে যায় স্বার্থছাড়াই সে প্রেম তো আসল । আজকের সমাজে সে প্রেম হয়ত মুখে প্রকাশ করা যায় না কিন্তু প্রায় প্রত্যেক মানুষের মধ্যেই গোপনে বিরাজ করে।
বসন্ত ঋতু প্রেমের ঋতু এটা বলা যায়। কিন্তু আমি একজনকে ভালোবাসি এটা বলতে আমরা কুন্ঠিত বোধ করি, জড়তা আসে মনে। কিন্তু ভাবুন কৃষ্ণ পত্নী সত্যভামা, জাম্ববতী, বা কালিন্দী ভজনা আমরা করি না। স্থানও পায় নি সাহিত্যে সেভাবে । অথচ স্থান পেয়েছে রাধাকৃষ্ণের প্রেমলীলা, রাসলীলা, দোলপূর্ণিমা।
এর কয়েকটি কারণ হলো
প্রথমত:-নিঃস্বার্থ ভালোবাসার বিকল্প নেই।
দ্বিতীয়ত:-অবসাদ কাটাতে প্রেম ই সব থেকে ভালো ঔষধ।
তৃতীয়ত:-রাধাতত্ত্বে প্রানের টান আছে। আছে এক নির্ভেজাল শান্তি।
তাই তো কবিগুরু রবীন্দ্রনাথও বসন্ত উৎসবের গান লিখেছিলেন।
এবার একটু অন্যভাবে বলি রাধাভাব কি। যা প্রত্যেকের মধ্যেই আছে।
ধরুন ভ্রমণপিপাসু মানুষ সংসারের বাঁধা, অর্থনৈতিক প্রতিকূলতা উপেক্ষা করেও বারেবারে ঘর ছেড়ে বেরিয়ে পড়ে পাহাড়, নদী ,সমুদ্রতীরে বা জঙ্গলে। এখানে তাঁর ইচ্ছাটি রাধাভাব। কৃষ্ণ এখানে প্রকৃতি। ঠিক যেমন স্বামী আয়ানের কড়া পাহাড়া উপেক্ষা করে রাধার রাতের অন্ধকারে যমুনা তীরে কৃষ্ণের সাথে দেখা করার প্রয়াসের ন্যায় কঠিন কাজ। শত বাঁধা যেখানে উপেক্ষিত। অথবা নিধুবনে লুকিয়ে কৃষ্ণের সঙ্গে সাক্ষাৎ।
পরকীয়া কেবল একজন নারী পুরুষের মধ্যেই হয় এমনটা নয়। প্রকৃতি প্রেম ও পরকীয়া।পশু প্রেমও পরকীয়া। যে প্রেমে স্বকীয় প্রেমের থেকেও বেশি আনন্দ অনুভূত হয় সে প্রেমই পরকীয়া প্রেম।
প্রেমে মিলনের আকাঙ্খা থাকেই। এটা স্বাভাবিক চাহিদা। পরকীয়া প্রেমে শরীর মুখ্য। শরীর বাদ দিয়ে পরকীয়া প্রেম যেমন হয়না। তেমনি ভ্রমন পিপাসু মানুষ ঘরে বসে ভ্রমনের অনুভূতি নিতে পারে না। সে চায় বারেবারে ফিরে যেতে পাহাড়, নদী, জঙ্গল, বা সমুদ্রের কিনারায়। এটাই রাধাভাব।
মনের টানে যা ইচ্ছা তাই করা উচিত। মনকে কষ্ট দেওয়া অপরাধ। এই মনের আকাঙ্খা ,চাহিদা এসবই হচ্ছে রাধভাবের প্রকাশ মাত্র। তবে তা যেন বিবেক বর্জিত বা অসভ্যতা না হয়। তা যেন নিঃস্বার্থ ও সমাজের জন্য মঙ্গলকারী হয় সে দিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সমাপ্ত
--------------------