উলঙ্গ ভুত ....✍প্রাণকৃষ্ণ মিশ্র
ছোটগল্প
উলঙ্গ ভুত
প্রাণকৃষ্ণ মিশ্র
আমাদের গ্রামে জুঁকো নামে এক পুকুর আছে । আসলে পুকুরটিতে বরাবরই খুব জোঁক তাই এমন নাম। পুকুরটির চারিপাড়ে অর্জুন, বট, আঁকর গাছের জঙ্গল। সন্ধ্যার পর সেকালে ওই পুকুরের দিকে কেউ যেত না।
পাঁচু দাদুরা ছয় বন্ধু রোজ গ্রামের শিব দুয়ারে সন্ধ্যার পরই আড্ডা দিত। সেই আড্ডায় আমার দাদুও রোজ যেত গল্প করতে। সন্ধ্যায় বেশ কাটত ওনাদের আড্ডা।
একদিন ওই জুঁকোর পাড়ে বটগাছটায় গ্রামেরই এক গৃহ বধূ শাড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। শীতকালের রাত সবে সন্ধ্যা সাতটা। কিছুক্ষন আগেই হালকা দু এক পশলা বৃষ্টি পড়ায় সেদিন দাদুদের আড্ডা ঠিক জমে ওঠেনি। পাঁচু দাদু, বিকাশ পড়েল ও আমার দাদু সহ আর একজন হাজির হলেও বাকিরা অনুপস্থিত। লঙ্কা পিঁয়াজ দিয়ে মুড়ি খেতে খেতে আত্মহত্যার গল্প রসালো হয়ে উঠেছে। এমন সময় পাঁচু দাদু একটু বেশি সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে বলছেন -
”ওসব ভুত টুত বলে কিচ্ছু হয় না। সবই মনের ভুল। ভুত আবার কি?মানুষ মরে গেলেই সব শেষ। “
এমন সময় আমার দাদু বললেন- “মানলাম ভাই ভুত বলে কিছু হয়না। কিন্তু শ্বশানের কাছ দিয়ে গেলে বুকটা কেমন হালকা হয়ে যায় কেন? শুধুই মনে হয় পিছনে কে যেন অনুসরণ করছে।”
পাঁচু দাদু বললেন -সবই মনের ভুল রে। তোরা খুব ভীতু।
এমন সময় পাড়ারই এক দাদু বললেন পাঁচু দাদুকে- ,” তুই বড্ড সাহসী। এখন তুই জুঁকোর পাড়ে যেতে পারবি?
পাঁচু দাদু বললেন- হাঁ পারব। কি দিবি বল।
আমার দাদু বললেন- ঠিক আছে জুঁকোর পাড়ে গিয়ে এই গোঁজটা পুঁতে দিয়ে আসতে হবে। কাল সকালে গিয়ে আমরা দেখব। আর এটা পারলেই কাল সন্ধ্যায় জমিয়ে পিকনিক।
পাঁচু দাদু টর্চ নিয়ে আহেরের পাড় পেরিয়ে একাই
জুঁকোর পাড়ের দিকে হাঁটতে লাগলেন। আমার দাদুদের থেকে দূরত্ব ধীরে ধীরে বাড়ছে । এদিকে ফাঁকা মাঠে উত্তুরে হাওয়া সোঁ সোঁ আওয়াজ। পাঁচু দাদুও ভয় পাচ্ছেন। এদিকে তর্ক জিততেই হবে। তাই ফিরে আসার উপায় নেই। সকাল হলেই সারা গ্রামে ছড়িয়ে যাবে পাঁচু ভীতু।
টর্চের আলোয় জুঁকোর পাড়ে এক ভয়ানক মোহময়ী পরিবেশ তৈরি করেছে। জুঁকোয় পৌঁছে পাঁচু দাদু ভাবছেন তর্ক প্রায় জেতা হয়েই গেছে। মনে আনন্দ হচ্ছে। আগামী কাল জমিয়ে পিকনিক হবে।
পাঁচু দাদু টর্চটি পুকুরের পাড়ে যেই না রাখলেন ,অমনি টর্চটি গড়িয়ে সোজা পুকুরে। ঝপাং…..।
এক গভীর আতঙ্ক দাদুর মনে।
যাই হোক ভেবে আর কাজ নেই। এবার পাঁচু দাদু ভয়ে ভয়ে অন্ধকারেই গোঁজটি মাটিতে ঠুকে ঠুকে বেশ কিছুটা গাঁড়লেন আর বট গাছটির দিকে একবার তাকালেন।
এবার ফিরে যাওয়ার পালা। তর্কে জিতে গেছেন পাঁচু দাদু।
যেই না পাঁচু দাদু উঠে হাঁটতে শুরু করলেন, পিছন থেকে কেউ যেন লুঙ্গি টেনে ধরল।
পাঁচু দাদু পিছন ঘুরে তাকিয়ে আবার হাঁটার চেষ্টা করলেন। আবার টান পড়ল।
আতঙ্ক গ্রাস করেছে পাঁচু দাদুকে।
জোর চিৎকার করলেন - ওর বিকাশ, হরি সাধন(আমার দাদু) বাঁচা আমায় , রাম রাম রাম রাম ভু উ উ উ ত …….
এক্কেবারে অজ্ঞান । মানে পাঁচু দাদু সংজ্ঞা হারিয়েছেন।
আমার দাদু, বিকাশ দাদু সব ছুটে এসে চোখে মুখে জল দিলেন পাঁচু দাদুর। জ্ঞান ফিরল এবার। চোখ খুলে তাকালেন পাঁচু দাদু।
এদিকে বিকাশ দাদু আমার দাদুকে দেখালেন যা- তা ভয়ঙ্কর ব্যাপার।
পাঁচু দাদু ভয়ে ভয়ে লুঙ্গির উপরেই গোঁজ টি পুঁতেছেন। আর দ্রুত ছুটতে গিয়ে পাঁচু দাদু শুধু জ্ঞান হারিয়েছেন তাই নয়। লুঙ্গি আটকে গোঁজে, আর পাঁচু দাদু তখন “উলঙ্গ”!!!😢
সে দিন আর শিবদুয়ারে আড্ডা বসে নি।
তবে শুনেছিলাম পরের দিন শিবদুয়ারে পিকনিক হয়েছিল।
পাঁচু দাদুরা ছয় বন্ধু রোজ গ্রামের শিব দুয়ারে সন্ধ্যার পরই আড্ডা দিত। সেই আড্ডায় আমার দাদুও রোজ যেত গল্প করতে। সন্ধ্যায় বেশ কাটত ওনাদের আড্ডা।
একদিন ওই জুঁকোর পাড়ে বটগাছটায় গ্রামেরই এক গৃহ বধূ শাড়ি দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। শীতকালের রাত সবে সন্ধ্যা সাতটা। কিছুক্ষন আগেই হালকা দু এক পশলা বৃষ্টি পড়ায় সেদিন দাদুদের আড্ডা ঠিক জমে ওঠেনি। পাঁচু দাদু, বিকাশ পড়েল ও আমার দাদু সহ আর একজন হাজির হলেও বাকিরা অনুপস্থিত। লঙ্কা পিঁয়াজ দিয়ে মুড়ি খেতে খেতে আত্মহত্যার গল্প রসালো হয়ে উঠেছে। এমন সময় পাঁচু দাদু একটু বেশি সাহসিকতার পরিচয় দিয়ে বলছেন -
”ওসব ভুত টুত বলে কিচ্ছু হয় না। সবই মনের ভুল। ভুত আবার কি?মানুষ মরে গেলেই সব শেষ। “
এমন সময় আমার দাদু বললেন- “মানলাম ভাই ভুত বলে কিছু হয়না। কিন্তু শ্বশানের কাছ দিয়ে গেলে বুকটা কেমন হালকা হয়ে যায় কেন? শুধুই মনে হয় পিছনে কে যেন অনুসরণ করছে।”
পাঁচু দাদু বললেন -সবই মনের ভুল রে। তোরা খুব ভীতু।
এমন সময় পাড়ারই এক দাদু বললেন পাঁচু দাদুকে- ,” তুই বড্ড সাহসী। এখন তুই জুঁকোর পাড়ে যেতে পারবি?
পাঁচু দাদু বললেন- হাঁ পারব। কি দিবি বল।
আমার দাদু বললেন- ঠিক আছে জুঁকোর পাড়ে গিয়ে এই গোঁজটা পুঁতে দিয়ে আসতে হবে। কাল সকালে গিয়ে আমরা দেখব। আর এটা পারলেই কাল সন্ধ্যায় জমিয়ে পিকনিক।
পাঁচু দাদু টর্চ নিয়ে আহেরের পাড় পেরিয়ে একাই
জুঁকোর পাড়ের দিকে হাঁটতে লাগলেন। আমার দাদুদের থেকে দূরত্ব ধীরে ধীরে বাড়ছে । এদিকে ফাঁকা মাঠে উত্তুরে হাওয়া সোঁ সোঁ আওয়াজ। পাঁচু দাদুও ভয় পাচ্ছেন। এদিকে তর্ক জিততেই হবে। তাই ফিরে আসার উপায় নেই। সকাল হলেই সারা গ্রামে ছড়িয়ে যাবে পাঁচু ভীতু।
টর্চের আলোয় জুঁকোর পাড়ে এক ভয়ানক মোহময়ী পরিবেশ তৈরি করেছে। জুঁকোয় পৌঁছে পাঁচু দাদু ভাবছেন তর্ক প্রায় জেতা হয়েই গেছে। মনে আনন্দ হচ্ছে। আগামী কাল জমিয়ে পিকনিক হবে।
পাঁচু দাদু টর্চটি পুকুরের পাড়ে যেই না রাখলেন ,অমনি টর্চটি গড়িয়ে সোজা পুকুরে। ঝপাং…..।
এক গভীর আতঙ্ক দাদুর মনে।
যাই হোক ভেবে আর কাজ নেই। এবার পাঁচু দাদু ভয়ে ভয়ে অন্ধকারেই গোঁজটি মাটিতে ঠুকে ঠুকে বেশ কিছুটা গাঁড়লেন আর বট গাছটির দিকে একবার তাকালেন।
এবার ফিরে যাওয়ার পালা। তর্কে জিতে গেছেন পাঁচু দাদু।
যেই না পাঁচু দাদু উঠে হাঁটতে শুরু করলেন, পিছন থেকে কেউ যেন লুঙ্গি টেনে ধরল।
পাঁচু দাদু পিছন ঘুরে তাকিয়ে আবার হাঁটার চেষ্টা করলেন। আবার টান পড়ল।
আতঙ্ক গ্রাস করেছে পাঁচু দাদুকে।
জোর চিৎকার করলেন - ওর বিকাশ, হরি সাধন(আমার দাদু) বাঁচা আমায় , রাম রাম রাম রাম ভু উ উ উ ত …….
এক্কেবারে অজ্ঞান । মানে পাঁচু দাদু সংজ্ঞা হারিয়েছেন।
আমার দাদু, বিকাশ দাদু সব ছুটে এসে চোখে মুখে জল দিলেন পাঁচু দাদুর। জ্ঞান ফিরল এবার। চোখ খুলে তাকালেন পাঁচু দাদু।
এদিকে বিকাশ দাদু আমার দাদুকে দেখালেন যা- তা ভয়ঙ্কর ব্যাপার।
পাঁচু দাদু ভয়ে ভয়ে লুঙ্গির উপরেই গোঁজ টি পুঁতেছেন। আর দ্রুত ছুটতে গিয়ে পাঁচু দাদু শুধু জ্ঞান হারিয়েছেন তাই নয়। লুঙ্গি আটকে গোঁজে, আর পাঁচু দাদু তখন “উলঙ্গ”!!!😢
সে দিন আর শিবদুয়ারে আড্ডা বসে নি।
তবে শুনেছিলাম পরের দিন শিবদুয়ারে পিকনিক হয়েছিল।
সমাপ্ত
--------------------