আবেগী মন ....✍ প্রাণ কৃৃৃষ্ণ মিশ্র
গল্প
আবেগী মন
প্রাণ কৃৃৃষ্ণ মিশ্র
সৈকত গৌস্বামী একজন জমিদার। জমিদার বলতে সে অর্থে প্রচুর জমির মালিক, লেঠেল আছে এমনটা নয়। তবে গ্রামে ৬০-৭০বিঘা জমি তাঁর আছে। গ্রামের লোকজনেরা বেশ মান্য করেন ওনাকে। দালান বাড়ি, বড় মড়াই, 20 টিরও বেশি গরু আছে ওনার গোয়ালে।
দুই মেয়ে ও এক সন্তানের পিতা। বড় মেয়ের কলকাতায় বনেদি বাড়িতে বিয়ে দিয়েছেন। একমাত্র ছেলে লেখাপড়ায় খুব ভালো না হলেও ,তাতে ওনার দুঃখ নেই।
বিকালে গ্রামের শিব দুয়ারে বসে যখন আড্ডা দেন, তখন আরো কিছু বয়স্ক মানুষ ওনাকে ঘিরে গল্প করেন। একদিকে তাসের আসর বসে, অন্যদিকে শিবদুয়ারে চলে বয়স্কদের গুলতানি। সময়টা বেশ ভালোই কেটে যায়। ছোট মেয়ে সবে একাদশ শ্রেণীতে পড়ে। তাই এখনই ওর বিয়ে দেবার তারা নেই।
বাড়িতে কাজের লোক বলতে গোয়ালঘর সামলানোর একজন আছে।তবে প্রয়োজনে পূজা পার্বণের সময় বাড়ির কাজের জন্য কয়েকদিনের জন্য কাউকে রাখেন। গৃহস্থালির সমস্ত কাজই সৈকত বাবুর গিন্নিই সামলান। প্রচুর উপার্জন থাকলেও সৈকত বাবু একটু বেশিই কিপ্টে। সে নিয়ে গ্রামের শিবদুয়ারে ফিসফিসানি চলে। তবে সেদিকে তেমন ভ্রূক্ষেপ করেন না। দিনে দ-ু তিনবার জমিতে যাওয়া, বাজার দোকান করা আর মুনিষদের সাথেই সময় কাটিয়ে ফেলেন ।
ছোট মেয়ে ঋষিতা বড্ড বাচাল। আসলে এই বয়সে সকলেই কমবেশি বাচাল হয়। উঠতি যৌবনের হাতছানি সামলানো সকলের পক্ষে সম্ভব হয় না। দুর্গাপূজার সময় ওর মা কয়েকদিনের জন্য বাপের বাড়িতে যায়। কিন্তু ঋষিতা থেকে যায় গ্রামেই। মা না থাকায় একটু বাঁধন ছাড়া ঋষিতা। কয়েকদিনে গোয়ালে কাজ করা ছেলেটির সাথে দু -এক কথা গল্প করতে করতে ঋষিতা ওর প্রেমে পড়ে যায়। এটা বয়সের ডাক।ওই বয়সে ভালোমন্দ বিচার করার ক্ষমতা থাকে না অনেকেরই। ঋষিতার ও ছিল না। না থাকাই স্বাভাবিক। সবে ১৬ বছর ওর বয়স।
দুর্গাপূজার পর মা ফিরে আসার পরে লক্ষ্য করে ঋষিতার উদ্ভ্রান্ত ভাব। কেমন যেন লেখাপড়ায় মন নেই, বাড়ির মধ্যে থাকতে চায় না, অন্যমনষ্ক।
জিজ্ঞাসা করলে ঋষিতা এড়িয়ে যায়। মাকে ও কিছু না বলে।
পূজার ছুটিও এদিকে শেষ ।ভাতৃ দ্বিতীয়ার পরের দিন স্কুল খুলতে ঋষিতা স্কুলে যায়। বেশ কিছুদিন ঋষিতা ছেলেটির সাথে যোগাযোগ রাখতে থাকে স্কুলের পথেই, কখনও বা টিফিন টাইমে। ওদের ভালোবাসার গভীরতা বাড়ে।
একদিন স্কুল ছুটি হয়ে যায়, এদিকে ঋষিতা বাড়ি ফেরেনা। সৈকত বাবু সাইকেল নিয়ে স্কুলে গিয়ে খোঁজ নেন। হেডমাস্টারমশাই বলেন ঋষিতা তো আজ স্কুল আসে নি।
মাথায় বাজ পড়ে সৈকতের। কোথায় গেল মেয়ে? ক্লাসের
বিভিন্ন বন্ধু, বান্ধবীদের বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়েও কিছু জানতে পারেন না। থানায় মিসিং ডায়েরি করলেন। সারা গ্রামে দুঃখের ছায়া। এমনটা আগে কখনো ঘটে নি। আশেপাশের গ্রামেও খবর ছড়ায়।
৫দিন পর ঋষিতা ফিরে আসে গ্রামে। কপালে চওড়া সিঁদুর, হাতে শাঁখা। গ্রামেরই যে ছেলেটি ওদের গোয়ালে মুনিসের কাজ করতো তাকেই ঋষিতা স্বামী হিসাবে গ্রহণ করেছে। চারিদিকে পাঁচকথা রটিতে সময় লাগেনি খুব বেশি।
রাজকন্যা ঋষিতা আজ নববধূ।
কন্যার এই সিদ্ধান্ত মেনে নেন নি সৈকত বাবু। কোন দিন মেনে নিতেও পারবেন না। এই তাঁর সিদ্ধান্ত।
এদিকে কষ্টের সংসারে ঋষিতার ও দিন দিন মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু সেই কষ্ট ভাগ করে নেবার মত আজ আর তার পাশে কেউ নেই।
ব্রাহ্মন পরিবারের মেয়ে কিনা বিয়ে করল একজন শূদ্র ঘরের ছেলেকে। গ্রামের উচ্চ বর্ণের পরিবারগুলোর কারুর সাথে দেখা হলেও তাঁরা মুখ ঘুরিয়ে নেয় ঋষিতাকে দেখলে।
ঋষিতা এই যন্ত্রনা সহ্য করতে পারেনা। রাতের পর রাত বিনিদ্র রজনী কাটে ঋষিতার। ও দেখে ওর স্বামী প্রতিদিন রাতে ড্রিঙ্ক করে বাড়ি ফেরে। লোকের জমিতে কাজ করে এটা মেনে নিলেও স্বামীর ড্রিঙ্ক করা মেনে নিতে পারেনি। এই নিয়ে প্রতি রাতেই ঝগড়া অশান্তি স্বামীর সাথে।গরিবী মেনে নিতে কষ্ট হয় না ঋষিতার , কিন্তু স্বামীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট মানতে তার অসুবিধা। ঝগড়ার সময় মদ্যপ স্বামীর হাতে প্রতি রাতেই মার খায়।
অভাবের সংসারে শ্বাশুড়ি বলে তাঁর সাথে জমিতে কাজে যেতে। কাজ না থাকলে পুকুরে গুগলি কুড়াতেও হয়েছে ঋষিতাকে। ভাগ্যের পরিহাসে যে কাজ কোন দিনও ঋষিতাকে পিতার ঘরে করতে হয়নি, সে কাজ শ্বশুড় বাড়িতে আজ ঋষিতার নিত্যদিনের সঙ্গী।
ঋষিতা বাড়ে বাড়ে স্বামীকে অনুরোধ করে গ্রাম ছেড়ে কোথাও কোন শহরে গিয়ে থাকার জন্য। সেখানে গিয়ে কাজ খুঁজে নেবার কথা। দরকারে ঋষিতাও কিছু একটা করবে। কিন্তু ওর কথা কে শোনে?
বরং এসব কথা বলায় দিন দিন ঋষিতার উপর ওর স্বামীর অত্যাচার বাড়তেই থাকে।
ঋষিতা আর সহ্য করতে পারে না। একদিকে স্বামীর অত্যাচার অন্যদিকে পিতার অবহেলা। গ্রাম্য সমাজ ব্যবস্থার ঘৃণা কুঁড়ে কুঁড়ে খায় ঋষিতার হৃদয়।
একদিন সন্ধ্যায়, টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে। দূরে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে শাঁখের আওয়াজ শুনছে ঘরে বসে ঋষিতা। আজ ওর মন বড়োই যন্ত্রনা কাতর। এখনও কাজ থেকে ফেরেনি ওর স্বামী। শ্বাশুড়ি এসে বলে যায় সন্ধ্যাটা দে বউ।
ও যেন শুনতেই পায়না কিছু। বড্ড উদাস।
স্বামী মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরতেই শাশুড়ি উত্তেজিত হয়ে বলে ছেলেকে -
কতবার তোর বউ কে বললাম সন্ধ্যা দিতে। ও শুনলেই না। বড়লোকের মেয়ে বিয়ে করেছিস। অলক্ষনে মেয়ে এবার বোঝ।
স্বামী উত্তেজিত হয়ে ঋষিতাকে এসে সপাটে এক চর মারে। ঋষিতা আজ আর কোন প্রতিবাদ করেনি। আর কোন প্রতিবাদ ঋষিতা করবে না।
একটু রাত্রি হতেই সবাই খেয়ে নেয়। ঋষিতা সকলকে খেতে দেয়। সকলে প্রায় নিদ্রামগ্ন। রাত্রি ১১ টা বাজে। ঋষিতা চুপিচুপি পায়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে।
আজ ও ভীষন শান্ত। আজ ওর মনে কোন বাচলতা নেই। গ্রামের শিবদুয়ারে প্রণাম ঠুকে ঋষিতা একাই এগিয়ে চলে অন্ধকারের পথে অজানা ঠিকানায়। ঋষিতা ভালো থাকতে চায় এবার।
রাত্রি তিন প্রহর পেরিয়ে ভোর হয়। কোকিল ডাকে ঘুম ভাঙে গ্রামের।
ভোর হতে ঋষিতাকে গ্রামে প্রাত:কৃত্য করতে যাওয়া কয়েকজন প্রথম দেখে ঋষিতার দেহ ঝুলছে আমগাছের ডালে।
ঋষিতা আজ শান্ত। ওর ভালোবাসা, আবেগ, বাচলতা সবই আজ স্তব্দ।
পুলিশ আসে গ্রামে।
দুই মেয়ে ও এক সন্তানের পিতা। বড় মেয়ের কলকাতায় বনেদি বাড়িতে বিয়ে দিয়েছেন। একমাত্র ছেলে লেখাপড়ায় খুব ভালো না হলেও ,তাতে ওনার দুঃখ নেই।
বিকালে গ্রামের শিব দুয়ারে বসে যখন আড্ডা দেন, তখন আরো কিছু বয়স্ক মানুষ ওনাকে ঘিরে গল্প করেন। একদিকে তাসের আসর বসে, অন্যদিকে শিবদুয়ারে চলে বয়স্কদের গুলতানি। সময়টা বেশ ভালোই কেটে যায়। ছোট মেয়ে সবে একাদশ শ্রেণীতে পড়ে। তাই এখনই ওর বিয়ে দেবার তারা নেই।
বাড়িতে কাজের লোক বলতে গোয়ালঘর সামলানোর একজন আছে।তবে প্রয়োজনে পূজা পার্বণের সময় বাড়ির কাজের জন্য কয়েকদিনের জন্য কাউকে রাখেন। গৃহস্থালির সমস্ত কাজই সৈকত বাবুর গিন্নিই সামলান। প্রচুর উপার্জন থাকলেও সৈকত বাবু একটু বেশিই কিপ্টে। সে নিয়ে গ্রামের শিবদুয়ারে ফিসফিসানি চলে। তবে সেদিকে তেমন ভ্রূক্ষেপ করেন না। দিনে দ-ু তিনবার জমিতে যাওয়া, বাজার দোকান করা আর মুনিষদের সাথেই সময় কাটিয়ে ফেলেন ।
ছোট মেয়ে ঋষিতা বড্ড বাচাল। আসলে এই বয়সে সকলেই কমবেশি বাচাল হয়। উঠতি যৌবনের হাতছানি সামলানো সকলের পক্ষে সম্ভব হয় না। দুর্গাপূজার সময় ওর মা কয়েকদিনের জন্য বাপের বাড়িতে যায়। কিন্তু ঋষিতা থেকে যায় গ্রামেই। মা না থাকায় একটু বাঁধন ছাড়া ঋষিতা। কয়েকদিনে গোয়ালে কাজ করা ছেলেটির সাথে দু -এক কথা গল্প করতে করতে ঋষিতা ওর প্রেমে পড়ে যায়। এটা বয়সের ডাক।ওই বয়সে ভালোমন্দ বিচার করার ক্ষমতা থাকে না অনেকেরই। ঋষিতার ও ছিল না। না থাকাই স্বাভাবিক। সবে ১৬ বছর ওর বয়স।
দুর্গাপূজার পর মা ফিরে আসার পরে লক্ষ্য করে ঋষিতার উদ্ভ্রান্ত ভাব। কেমন যেন লেখাপড়ায় মন নেই, বাড়ির মধ্যে থাকতে চায় না, অন্যমনষ্ক।
জিজ্ঞাসা করলে ঋষিতা এড়িয়ে যায়। মাকে ও কিছু না বলে।
পূজার ছুটিও এদিকে শেষ ।ভাতৃ দ্বিতীয়ার পরের দিন স্কুল খুলতে ঋষিতা স্কুলে যায়। বেশ কিছুদিন ঋষিতা ছেলেটির সাথে যোগাযোগ রাখতে থাকে স্কুলের পথেই, কখনও বা টিফিন টাইমে। ওদের ভালোবাসার গভীরতা বাড়ে।
একদিন স্কুল ছুটি হয়ে যায়, এদিকে ঋষিতা বাড়ি ফেরেনা। সৈকত বাবু সাইকেল নিয়ে স্কুলে গিয়ে খোঁজ নেন। হেডমাস্টারমশাই বলেন ঋষিতা তো আজ স্কুল আসে নি।
মাথায় বাজ পড়ে সৈকতের। কোথায় গেল মেয়ে? ক্লাসের
বিভিন্ন বন্ধু, বান্ধবীদের বাড়ি গিয়ে খোঁজ নিয়েও কিছু জানতে পারেন না। থানায় মিসিং ডায়েরি করলেন। সারা গ্রামে দুঃখের ছায়া। এমনটা আগে কখনো ঘটে নি। আশেপাশের গ্রামেও খবর ছড়ায়।
৫দিন পর ঋষিতা ফিরে আসে গ্রামে। কপালে চওড়া সিঁদুর, হাতে শাঁখা। গ্রামেরই যে ছেলেটি ওদের গোয়ালে মুনিসের কাজ করতো তাকেই ঋষিতা স্বামী হিসাবে গ্রহণ করেছে। চারিদিকে পাঁচকথা রটিতে সময় লাগেনি খুব বেশি।
রাজকন্যা ঋষিতা আজ নববধূ।
কন্যার এই সিদ্ধান্ত মেনে নেন নি সৈকত বাবু। কোন দিন মেনে নিতেও পারবেন না। এই তাঁর সিদ্ধান্ত।
এদিকে কষ্টের সংসারে ঋষিতার ও দিন দিন মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছে। কিন্তু সেই কষ্ট ভাগ করে নেবার মত আজ আর তার পাশে কেউ নেই।
ব্রাহ্মন পরিবারের মেয়ে কিনা বিয়ে করল একজন শূদ্র ঘরের ছেলেকে। গ্রামের উচ্চ বর্ণের পরিবারগুলোর কারুর সাথে দেখা হলেও তাঁরা মুখ ঘুরিয়ে নেয় ঋষিতাকে দেখলে।
ঋষিতা এই যন্ত্রনা সহ্য করতে পারেনা। রাতের পর রাত বিনিদ্র রজনী কাটে ঋষিতার। ও দেখে ওর স্বামী প্রতিদিন রাতে ড্রিঙ্ক করে বাড়ি ফেরে। লোকের জমিতে কাজ করে এটা মেনে নিলেও স্বামীর ড্রিঙ্ক করা মেনে নিতে পারেনি। এই নিয়ে প্রতি রাতেই ঝগড়া অশান্তি স্বামীর সাথে।গরিবী মেনে নিতে কষ্ট হয় না ঋষিতার , কিন্তু স্বামীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট মানতে তার অসুবিধা। ঝগড়ার সময় মদ্যপ স্বামীর হাতে প্রতি রাতেই মার খায়।
অভাবের সংসারে শ্বাশুড়ি বলে তাঁর সাথে জমিতে কাজে যেতে। কাজ না থাকলে পুকুরে গুগলি কুড়াতেও হয়েছে ঋষিতাকে। ভাগ্যের পরিহাসে যে কাজ কোন দিনও ঋষিতাকে পিতার ঘরে করতে হয়নি, সে কাজ শ্বশুড় বাড়িতে আজ ঋষিতার নিত্যদিনের সঙ্গী।
ঋষিতা বাড়ে বাড়ে স্বামীকে অনুরোধ করে গ্রাম ছেড়ে কোথাও কোন শহরে গিয়ে থাকার জন্য। সেখানে গিয়ে কাজ খুঁজে নেবার কথা। দরকারে ঋষিতাও কিছু একটা করবে। কিন্তু ওর কথা কে শোনে?
বরং এসব কথা বলায় দিন দিন ঋষিতার উপর ওর স্বামীর অত্যাচার বাড়তেই থাকে।
ঋষিতা আর সহ্য করতে পারে না। একদিকে স্বামীর অত্যাচার অন্যদিকে পিতার অবহেলা। গ্রাম্য সমাজ ব্যবস্থার ঘৃণা কুঁড়ে কুঁড়ে খায় ঋষিতার হৃদয়।
একদিন সন্ধ্যায়, টিপটিপ বৃষ্টি পড়ছে। দূরে গ্রামের বিভিন্ন বাড়ি থেকে শাঁখের আওয়াজ শুনছে ঘরে বসে ঋষিতা। আজ ওর মন বড়োই যন্ত্রনা কাতর। এখনও কাজ থেকে ফেরেনি ওর স্বামী। শ্বাশুড়ি এসে বলে যায় সন্ধ্যাটা দে বউ।
ও যেন শুনতেই পায়না কিছু। বড্ড উদাস।
স্বামী মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফিরতেই শাশুড়ি উত্তেজিত হয়ে বলে ছেলেকে -
কতবার তোর বউ কে বললাম সন্ধ্যা দিতে। ও শুনলেই না। বড়লোকের মেয়ে বিয়ে করেছিস। অলক্ষনে মেয়ে এবার বোঝ।
স্বামী উত্তেজিত হয়ে ঋষিতাকে এসে সপাটে এক চর মারে। ঋষিতা আজ আর কোন প্রতিবাদ করেনি। আর কোন প্রতিবাদ ঋষিতা করবে না।
একটু রাত্রি হতেই সবাই খেয়ে নেয়। ঋষিতা সকলকে খেতে দেয়। সকলে প্রায় নিদ্রামগ্ন। রাত্রি ১১ টা বাজে। ঋষিতা চুপিচুপি পায়ে ঘর থেকে বেরিয়ে আসে।
আজ ও ভীষন শান্ত। আজ ওর মনে কোন বাচলতা নেই। গ্রামের শিবদুয়ারে প্রণাম ঠুকে ঋষিতা একাই এগিয়ে চলে অন্ধকারের পথে অজানা ঠিকানায়। ঋষিতা ভালো থাকতে চায় এবার।
রাত্রি তিন প্রহর পেরিয়ে ভোর হয়। কোকিল ডাকে ঘুম ভাঙে গ্রামের।
ভোর হতে ঋষিতাকে গ্রামে প্রাত:কৃত্য করতে যাওয়া কয়েকজন প্রথম দেখে ঋষিতার দেহ ঝুলছে আমগাছের ডালে।
ঋষিতা আজ শান্ত। ওর ভালোবাসা, আবেগ, বাচলতা সবই আজ স্তব্দ।
পুলিশ আসে গ্রামে।
সমাপ্ত
--------------------