পুরনো গ্রিটিংস্ ....✍মিঠুন মজুমদার
হাস্যরসাত্মক ছোটগল্প
পুরনো গ্রিটিংস্
মিঠুন মজুমদার
ওফ্, সে কি দিন কালই না ছিল। ভাবলেই মনের ফুল বাগানে গোলাপ ফুল ফুটে ওঠে। এই তো সেদিন খই ভাজবার উপলক্ষে পুরনো বাক্সটা খুলেছিলাম। খুলতেই তাতে কত কিই না দেখতে পেলাম। তাতে ছিল - না পাঠানো চিঠি, পুরোনো গ্রিটিংস কার্ড, শুকনো গোলাপ, এমনকি একটি ছবিও পেলাম। ওফ্, কত কি মনে পরে গেল। তবে খুব সাবধানে! চারিপাশটা ভালো করে দেখে, চাপনিসে সরিয়ে দিলাম। পাছে গিন্নি না দেখতে পায়।
তবে যাই বল, আমাদের কালে এই সময়ে গ্রিটিংস্ কার্ড দেবার একটা হুলুস্থুল পড়ে যেত। বন্ধুকে দেব, দাদাকে দেব, স্যারকে দেব, বিশেষত প্রিয় বান্ধবীকে তো দেবই দেব। একবার তো ভেবেছিলাম , সবার আগে নিজের হাতে লেখা কবিতা দিয়ে 'ওকে' ঠিক ম্যানেজ করে নেব। সে আশা আর পূর্ণ হল না। 'ও'তো আমার হাতের লেখাই পড়তে পারল না! কি আর করা যাবে! সবই আমার চার আঙ্গুলের খেলা।
তবে হ্যাঁ, ওর নামে একবার মেলায় চরকী লটারী কেটে ডিম সিদ্ধ পেয়েছিলাম। ওফ্, সে কি আনন্দ। যেন 'ওকেই' পেয়ে গেছি। এখন যদি হত তবে Feeling happy বলে ফেসবুকেতে পোষ্ট করে দিতাম। পরে হয়ত, "রঞ্জনা, আমি আর আসব না" বলে গান গাইতেও হতে পারত।
তার পর কতকাল পেরিয়ে গেছে। এমনিতে বুঝতে পারিনা, যখন আয়নার সামনে দাড়াই আর মাথার সামনের টাক পরা অংশটা ঝিলিক দিয়ে ওঠে তখন বুঝি, সময় অনেক পেরিয়েছে।
এই তো সেবার, পটলাটা গ্রিটিংস্ কার্ড দিয়ে গিয়ে কি প্যাদানিই না খেল। নাকি ব্যাটা গ্রিটিংসের সাথে রক্ত দিয়ে চিঠিও দিয়েছিল। পরে শুনলাম পটলা নাকি পড়ার নাম করে রাত জেগে জেগে, মশা মেরে মেরে মশার রক্ত দিয়ে চিঠিটা লিখেছিল। ভাগ্যিস সময়টা এখন নয়, তবে ব্যাটাকে ডেঙ্গুতে ভুগতে হত।
তবে যাই হোক,শীতকালের এই সময়টা কিন্ত মনটা কেমন উড়ু উড়ু করে। মনে হয় যেন দ্বিতীয় বার বসন্ত পরেছে।বসন্তের কথা শুনলেই আমার আবার বুচির কথা মনে পরে। আর কেনই বা মনে পরবে না, শুনি? ও কেমন কুচি কুচি আলু ভাজা আর রুটি নিয়ে আসত আমার জন্য।
এই বুচিকে নিয়েই যত কান্ড। বুচিকে এমনিতেই স্কুলের শ্যামাপদর ভাই পছন্দ করত। সব কিছু ঠিক ঠাকই চলছিল। এমনকি চুঁ কিতকিত খেলাও চলছিল। সেইদিন বিকেলে ফাকাঁ দেখে গ্রিটিং দিতে বাড়ীতে যেতেই সমস্যাটা হল। বেগরবাই করল ওদের বাড়ীর কুকুর। কামড়াবি কামড়া ওমন জায়গায় কেউ কামড়ায় ? সে কি লজ্জা। তারপর থেকে সে মুখো হওয়া বন্ধ। সবই কপাল!
কিপটে প্যাঁলার কথাই ধর না। ব্যাটা তো শিয়ালদা ফুটপাত থেকে পাইকারি দরে গ্রিটিংস্ এনে সকলকে দিত। দিবি দে, একটু দেখে শুনে তো দিবি। নিজের বান্ধবীকেই কিনা বছরের প্রথম দিনে Happy Birthday কার্ড দেয়! যা,খাবি খা। ঘুড়ি ভো কাটা।
তাই এই সমস্ত পুরনো কথা ভেবেই বুকের ভেতরের দুঃখটা হঠাৎ করে 25শে ডিসেম্বরের ইকো পার্ক হয়ে গেছে। সব দুঃখ যেন এক জায়গা সারিবদ্ধ। এত বছর ধরে যেটা চাপা দিয়ে রেখেছিলাম।
মনে মনে ভাবলাম, অনেক তো হল,আর না। সমস্ত দুঃখকে ভালোবাসায় এক্সচেঞ্জ করে দিতে হবে। ভেবেই বাজার থেকে একটা টাটকা গোলাপ আর একটা গ্রিটিংস্ নিয়ে আসলাম গিন্নিকে দেব বলে। তাই বারোটা বাজতেই গিন্নী কে ডেকে বললাম "কি গো শুনছো ? হ্যাপি নিউ ইয়ার"। গিন্নী ঘুম ঘুম চোখে বিরক্তি ভরা সুরে বলল, "এ্যাঁ, এতো রাতে আমার সাথে মশকরা করা হচ্ছে। এই বুড়ো বয়সে কি ভিমরতি হল ? আর আদ্যিখেত্তা না করে এবার শুয়ে পর। হুম..।"
আর আমি ? লাইট লিভিয়ে ভেজা বেড়ালের মত গুটি সুটি মেরে শুয়ে পরলাম। ভাবলাম, দুঃখটা বুঝি আর গেল না!
তবে যাই বল, আমাদের কালে এই সময়ে গ্রিটিংস্ কার্ড দেবার একটা হুলুস্থুল পড়ে যেত। বন্ধুকে দেব, দাদাকে দেব, স্যারকে দেব, বিশেষত প্রিয় বান্ধবীকে তো দেবই দেব। একবার তো ভেবেছিলাম , সবার আগে নিজের হাতে লেখা কবিতা দিয়ে 'ওকে' ঠিক ম্যানেজ করে নেব। সে আশা আর পূর্ণ হল না। 'ও'তো আমার হাতের লেখাই পড়তে পারল না! কি আর করা যাবে! সবই আমার চার আঙ্গুলের খেলা।
তবে হ্যাঁ, ওর নামে একবার মেলায় চরকী লটারী কেটে ডিম সিদ্ধ পেয়েছিলাম। ওফ্, সে কি আনন্দ। যেন 'ওকেই' পেয়ে গেছি। এখন যদি হত তবে Feeling happy বলে ফেসবুকেতে পোষ্ট করে দিতাম। পরে হয়ত, "রঞ্জনা, আমি আর আসব না" বলে গান গাইতেও হতে পারত।
তার পর কতকাল পেরিয়ে গেছে। এমনিতে বুঝতে পারিনা, যখন আয়নার সামনে দাড়াই আর মাথার সামনের টাক পরা অংশটা ঝিলিক দিয়ে ওঠে তখন বুঝি, সময় অনেক পেরিয়েছে।
এই তো সেবার, পটলাটা গ্রিটিংস্ কার্ড দিয়ে গিয়ে কি প্যাদানিই না খেল। নাকি ব্যাটা গ্রিটিংসের সাথে রক্ত দিয়ে চিঠিও দিয়েছিল। পরে শুনলাম পটলা নাকি পড়ার নাম করে রাত জেগে জেগে, মশা মেরে মেরে মশার রক্ত দিয়ে চিঠিটা লিখেছিল। ভাগ্যিস সময়টা এখন নয়, তবে ব্যাটাকে ডেঙ্গুতে ভুগতে হত।
তবে যাই হোক,শীতকালের এই সময়টা কিন্ত মনটা কেমন উড়ু উড়ু করে। মনে হয় যেন দ্বিতীয় বার বসন্ত পরেছে।বসন্তের কথা শুনলেই আমার আবার বুচির কথা মনে পরে। আর কেনই বা মনে পরবে না, শুনি? ও কেমন কুচি কুচি আলু ভাজা আর রুটি নিয়ে আসত আমার জন্য।
এই বুচিকে নিয়েই যত কান্ড। বুচিকে এমনিতেই স্কুলের শ্যামাপদর ভাই পছন্দ করত। সব কিছু ঠিক ঠাকই চলছিল। এমনকি চুঁ কিতকিত খেলাও চলছিল। সেইদিন বিকেলে ফাকাঁ দেখে গ্রিটিং দিতে বাড়ীতে যেতেই সমস্যাটা হল। বেগরবাই করল ওদের বাড়ীর কুকুর। কামড়াবি কামড়া ওমন জায়গায় কেউ কামড়ায় ? সে কি লজ্জা। তারপর থেকে সে মুখো হওয়া বন্ধ। সবই কপাল!
কিপটে প্যাঁলার কথাই ধর না। ব্যাটা তো শিয়ালদা ফুটপাত থেকে পাইকারি দরে গ্রিটিংস্ এনে সকলকে দিত। দিবি দে, একটু দেখে শুনে তো দিবি। নিজের বান্ধবীকেই কিনা বছরের প্রথম দিনে Happy Birthday কার্ড দেয়! যা,খাবি খা। ঘুড়ি ভো কাটা।
মনে মনে ভাবলাম, অনেক তো হল,আর না। সমস্ত দুঃখকে ভালোবাসায় এক্সচেঞ্জ করে দিতে হবে। ভেবেই বাজার থেকে একটা টাটকা গোলাপ আর একটা গ্রিটিংস্ নিয়ে আসলাম গিন্নিকে দেব বলে। তাই বারোটা বাজতেই গিন্নী কে ডেকে বললাম "কি গো শুনছো ? হ্যাপি নিউ ইয়ার"। গিন্নী ঘুম ঘুম চোখে বিরক্তি ভরা সুরে বলল, "এ্যাঁ, এতো রাতে আমার সাথে মশকরা করা হচ্ছে। এই বুড়ো বয়সে কি ভিমরতি হল ? আর আদ্যিখেত্তা না করে এবার শুয়ে পর। হুম..।"
আর আমি ? লাইট লিভিয়ে ভেজা বেড়ালের মত গুটি সুটি মেরে শুয়ে পরলাম। ভাবলাম, দুঃখটা বুঝি আর গেল না!
সমাপ্ত
--------------------